Friday 27 January 2012

আলোচনা / পাঠপ্রতিক্রিয়া

শেষ পাতা

 সৌমিত্র রায়-এর অন্যান্য বই -
                                      
                                            বিষয়                       প্রকাশকাল 
হিজিবিজি                              কবিতা                          ২০০৫ 
চ্যাটমোড                              কবিতা                          ২০০৫ 
চ্যাট                                    চ্যাট সাহিত্য                    ২০০৮ 
এসো/এস-এম-এস-এ                 এস-এম-এস সাহিত্য          ২০০৯ 
ই-কবিতা                              কবিতা                          ২০০৯ 




সম্পাদিত পত্রিকা -

            দূরসংকেত (DX-ing এবং ইথারচর্চা ) 
           তথ্যসাহিত্য / infolit ( সাহিত্য )
                    i সাহিত্য (সাহিত্য)



(পাতা নং ২৩ / ২৩)

মশারির বাইরে

ঘুম। হঠাৎ ভাঙলো ৩টা ৪৬  রাত। বসেছি  খাটের উপরএলোমেলো। খাট  
এলোমেলো  আমি  কিছুটা গোছানো  
শ্বাসপ্রশ্বাস  গোছানো  আমার  মেয়ের  স্ত্রীর  
নাইট বাল্ব । জ্বলছে  টিউব লাইট  জ্বলছে  


বালিশ  তারপাশে কন্ডোমের প্যাকেট  ছেঁড়া  
কিছুই বলছে না  
বলছে না  কিছুই  টেবিলে জলের মগ   
শরীর বলছে  আরো একটু  অন্তত একবার  আরো   
আরো কিছুক্ষণ  


বাইরে পাখিরাও জাগলো  নানানভাবে ডাকছে  কথা  নানানভাবে  ভালো 
লাগছে । ভালো লাগছে না  মশা  আমি এখন  মশারির বাইরে  লিখছি  
এলোমেলো   কিছুটা গোছানো  


লিখছি  কানে বাজছে  উড়োজাহাজ  মুরগির ডাক  
সবথেকে বেশি  চোখ  নিভানো লন্ঠনে  তাকিয়ে আছে  
অন্যকিছু বলছে  বলছে  
কিন্তু বোঝা যাচ্ছে না  


রচনার তারিখ : ১৬ মার্চ ২০০৬  সময়: রাত ৩ টা ৪৬ 


(পাতা নং ২২ / ২৩)


   শান্তি     

হাঁটতে হাঁটতে

কথা হচ্ছিল । ফোনে । কথা । হাঁটতে হাঁটতে । কথা । বিস্কুট খেতে খেতে । 
চুলকোতে চুলকোতে । কাঁধ । কথা হচ্ছিল । পুকুরপাড় ধরে পিচরাস্তা । 
পার হলাম । 
পেরোলাম । 
একটা খাল । চৌচির । 

কথা হচ্ছিল । কথা । শেষ হল । 
লাইন কাটতেই SMS । তিনটি । একসাথে । 
চিন থেকে ২ টি । ১টি । অসম থেকে । 
বাংলাদেশ থেকে ফোন । ঘরে ফিরতেই । 

তারপর চুপচাপ । রিংটন নেই । আলো । 
কাঁপুনি নেই । নে-ই । অন্তত ২ দিন । 
নেই । 

হঠাৎ মিসড কল । তারপর । ISD কল । রাত ২ টো । বাংলাদেশ থেকে । তারপর সকাল । প্রতিদিনকার হাঁটা । হাঁটতে হাঁটতে বাসস্ট্যান্ড । অফিস । ট্রেকারে । বাসে । টেবিল । চেয়ারে হেলান । আমি । হঠাৎ ভাইব্রেশন । বুকে । বুকপকেটে । 

রচনার তারিখ : ১৫ মার্চ ২০০৬ সময়: রাত ৯ টা ১৬




 (পাতা নং ২১ / ২৩) 

নড়ছে সুতো

ছুঁচের পোঁদে সুতো  কাঁথা  সেলাই হচ্ছে  ব্রাত্য জীবন  এফোঁড় ওফোঁড়  জীবন  নতুন হচ্ছে   জানালা খোলা  হাওয়া  চাঁদ  তালগাছের ফাঁকে  

তালগাছের ফাঁকে  ইদুর  
তালগাছের ফাঁকে আলো  রাত  তালগাছের ফাঁকে  
তালগাছের ফাঁকে সিঁড়ি  ফাঁক ওঠানামা  
দেখা  ভাবা  শোনা  নড়ছে পাতা  শুকনো  
নড়ছে সুতো  হাওয়ায়  

নড়ছে আঙুল  নড়ছে চোখ  হাত  নড়ছে না  
মাথা  নড়ছে না  

কাল দোলপূর্ণিমা  কাল ঘেঁটুপুজোও  কাল চালকলাই ভাজা  রং  
কাল  ভোটের জন্য ছুটি বাতিল  কাল  সকাল  আজ রাত  সিঁড়ি  ফাঁকা

রচনার তারিখ : ১৪ মার্চ ২০০৬  সময়: সকাল ৯ টা ৫৪ মি  




(পাতা নং ২০ / ২৩)

কবিতা । আমি । আমার কবিতা ।

বর্ণে বর্ণ ছোঁয়া , অক্ষরে অক্ষর  তারপর হয়তো শুন্যতা  আবার শব্দ  শব্দে শব্দে ছোঁয়াছুঁয়ি  শুন্যতার  সংযোগ  ...ছেদ  ...যতি  অক্ষরের নৈশব্দে সৌন্দর্যের সঞ্চালন  অসুন্দরের জাগরণচিহ্ন  আমার বর্ণে হারিয়ে যাওয়া , তারপর শুন্যতায়  কবিতায়   

কবিতা তো কবি রচিত ভাষা  শব্দে শব্দে ছড়িয়ে রাখা ইশারা  অনেকরকম  নানান রং-এর আলো  আলো মিশ্রিত অন্ধকার  অনেকরকম  কখনো কবিতা হয় আলো-আঁধারী খেলা । পাঠভাবনায় খেলতে থাকে আলো  অন্ধকার  একটু একটু করে হারিয়ে যাওয়া  কোন এক আনন্দে  জেগে ওঠা  হারিয়ে যাওয়ার ভেতর  

কবিতা কবির ভালোলাগা  কিংবা না ভালোলাগা  না ভালোলাগা প্রকাশ করার ভালোলাগা । কবিতা তো অনেক কিছুই  আবার কিছুই নয়  

কবিতা আসলে অনেক কিছুকে নিজের মতো করে ভাবা  নিজের মতো  যা পাঠ করলে অন্যের চিন্তনকেও স্পর্শ করে  ভাবায়  কবিতার মধ্য দিয়ে চ্যাট করে কবি ও পাঠক  কথা বলে  গল্প করে  অনুপস্থিত কবির উপস্থিতি টের পায় পাঠক  দূরের অনেক কিছুই কাছাকাছি আসে  কবিতা এমন কিছু  যা পড়ে ফেলার পর ফুরিয়ে যায় না  বরং চিন্তাচিন্তনে ছড়িয়ে পড়ে  অনেক দূর যায়  কবিতা লিখতে  পাথরে খোদাই করার জন্য চায় পাথর  গাছের শুকনো ছাল , পাতা আর পাতার রস বা কালি  কাগজ কলম চায়  চায় রং-তুলি-ক্যানভাস  কিংবা চায়, মোবাইলের কি-প্যাড অথবা কম্পিউটারের কি-বোর্ড মাউস  কিংবা লোকালয়ে শুধুই উচ্চারণ  শব্দের পর শব্দ  ...ছন্দ ... শুনতে শুনতে মনের ভেতর গেঁথে যাওয়া  হৃদয় জুড়ে অনুরণন  

কবিতা আসলে কবির দেওয়া তথ্য  তথ্য  যা কোনো না কোনো ইদ্রিয়কে ছুঁয়ে যায়  

কোলাকুলি করে  কবিতা আসলে কিছুই নয়  আবার অনেক কিছু  




(পাতা নং ১৯ / ২৩)

নতুন ফাঁক

ভাঁজকরা পেপার  দুটো পার্ট  একটা রবিবারের এক্সট্রা  খুলছি  আমি  পড়ছি  
আমি দেখছি  ভাঁজ করছি  কাশছি  ঢাঁই ঢাঁই  জোর ঠান্ডা লেগেছে  
ইলেকশনের কাজ  রাত জেগে  ঠান্ডায়  


গভীর রাত  ঠান্ডা  ছুটছে গাড়ি  মেঠো রাস্তা  
রাস্তায় ধেড়ে ইঁদুর  
সারা রাস্তা জুড়েই   ফাঁকা মাঠ  রাস্তা  ফাঁকা  
পরিপূর্ণ শুন্যতায়  চারিদিক  সব  


নানান রকম মোড়  রাস্তা  নানান রকম  
নানান রকম প্রাণ  প্রাণী  
নানান রকম  
নানান রকম রাতজাগা  নানান রকম রাত  ফিরলাম  রাতে  


রাত  নতুন দিন শুরু হবে  একটু পরেই  টিউবলাইটের আলোয়  নতুন ভাবে রাত  নতুন ভোর  ফাঁকা হবে  নতুনভাবে ফাঁকা  নতুন  ফাঁক  নতুন  নতুন শুন্যতা  পেপারের নতুন ভাঁজ  অক্ষর  শব্দ  খবর  পুরানো সব  নতুনে  


রচনার তারিখ : ৮ জানুয়ারি ২০০৬   রাত ১১ টা ৩০ মি  








(পাতা নং ১৮ / ২৩)

আমার পাশে লেপ

জানালা খুলতেই আলো  ঠান্ডা হাওয়া  সাড়ে ছয় সকালের  সাদা আকাশ  ছাই রং-এর গাছ  তলায় রাস্তা  পাশে গোরু বাঁধা  দুটো  হেলে গোরু  পরপর জমি  

নাড়াগোছা  একটাই জমি  আলুচাষ । সামনে  ভিটের নীচে  

আলুজমি  সামনেই  ভিটের নীচে  জানালার নীচে  
কয়েকটা তালগাছ  কদমগাছ  
তার আগে  

তার আগে দেয়াল  তার আগে জানালা  জানালার তার  
তার আগে খাট  বিছানা  তার উপর  
তার উপর আমি  আমার পাশে লেপ  হাতঘড়ি  বালিশ  
একটাই রেডিও চলছে  

শুনছে  বাসি কান  নড়ছে  বাসিমুখ  এলোমেলো চুল  বাসি  দুটো চোখ  
বাসি  
বাসি দৃষ্টি  টাটকা আলো  টাটকা হাওয়া  বাসি জানালা বেয়ে  বাসি আকাশ  
সাতসকাল  সাতসকাল  টাটকা  

রচনার তারিখ: ৩ জানুয়ারি ২০০৬ সময়: সকাল ৬টা ৩৩ মি 








 (পাতা নং ১৭ / ২৩)